জিমের আগে পরে
আপনি মেকআপ করতে ভালোবাসেন। কিন্তু সঠিক সময়ে উপযুক্ত মেকআপ করতে জানেন কি? আপনার ত্বকে কোন ধরনের মেকআপ প্রয়োজন, তা যেমন জেনে নেওয়া জরুরি, তেমনই দিনের কোন সময় কতটা মেকআপ প্রয়োজন, সেটাও জানতে হবে।
By : Bartaman | Updated at : 7 Jun 2025 08:53 AM (IST)
আপনি মেকআপ করতে ভালোবাসেন। কিন্তু সঠিক সময়ে উপযুক্ত মেকআপ করতে জানেন কি? আপনার ত্বকে কোন ধরনের মেকআপ প্রয়োজন, তা যেমন জেনে নেওয়া জরুরি, তেমনই দিনের কোন সময় কতটা মেকআপ প্রয়োজন, সেটাও জানতে হবে। তবেই তা ত্বকে প্রয়োগ করতে পারবেন। ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়ার জন্য এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। যে কোনও ধরনের শরীরচর্চা এখন বেশিরভাগ মানুষের দৈনন্দিন রুটিন। ওয়ার্কআউটের আগে এবং পরে ত্বক পরিচর্যার ধরন আলাদা হবে। ত্বকের ধরন বুঝে যত্ন কীভাবে নেবেন, তার হদিশ দিলেন কসমেটোলজিস্ট সায়ন্তন দাস।
ওয়ার্কআউটের আগের যত্ন
প্রথমত ত্বক খুব ভালো করে পরিষ্কার রাখা উচিত। শরীরচর্চার আগে ত্বকে কোনও মেকআপ যাতে না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এরপর একটা মিস্ট স্প্রে করে দিন। কারণ এসময় ত্বককে শ্বাস নিতে দিতে হবে। রোমকূপের মুখ খোলা রাখতে হবে। আমরা যখন ওয়ার্কআউট করি, তখন অনেক বেশি ঘাম হয়। রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। ফলে ত্বকও শ্বাস নিতে চায়। খুব ঘন ময়েশ্চারাইজার, ঘন ক্রিম সেসময় ব্যবহার করলে ত্বকে ভাঁজ পড়ে যেতে পারে। ব্রণ, অ্যাকনে খুব সহজে ত্বকে চলে আসতে পারে। সেসব আটকাতে কোনওরকম মেকআপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
ঘরোয়া পদ্ধতি
ত্বকের ধরন অনুযায়ী মিস্ট ব্যবহার করুন। বাড়িতেই ঘরোয়া উপকরণের সাহায্যে মিস্ট তৈরি করে নিতে পারেন। দু’কাপ জলে একটু কর্পূর, লবঙ্গ, শসার কুচি আর দু’ফোঁটা পেপারমিন্ট অয়েল দিয়ে ফুটিয়ে নিন। এরপর সেই তরল ঠান্ডা করে স্প্রে-বোতলে রেখে দিন। এই মিস্ট ত্বককে রিফ্রেশ করবে। ত্বকের কোনও সমস্যা থাকলে তার সমাধান করবে। এটা ব্যবহার করলে সতেজ অনুভূতি তৈরি হবে। কারণ এর মধ্যে পেপারমিন্ট অয়েল রয়েছে। এই মিস্ট ব্যবহার করে ওয়ার্কআউট করতে গেলে শরীর থেকে সুন্দর গন্ধ বেরবে। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, এটা ব্যবহার করলে রোমকূপের মুখ খোলা থাকবে। সেগুলো বন্ধ হয়ে গেলে ওয়ার্কআউটের পর নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে।
সানস্ক্রিনের গুরুত্ব
সকালের দিকে যে কোনও সময় শরীরচর্চা করলে অবশ্যই ত্বকে সানস্ক্রিন অ্যাপ্লাই করতে হবে। যদিও ওয়ার্কআউট সেশন সাধারণত ঘরের ভিতরেই হয়। তবুও সূর্যের আলোয় বেরলে মাইল্ড সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন। এক্ষেত্রে ঘন এসপিএফ-যুক্ত সানস্ক্রিন প্রয়োজন নেই। তাহলে ত্বক ঘেমে যাবে। রোমকূপ বন্ধ হয়ে যাবে। সানস্ক্রিনে যেন এমন কোনও উপাদান না থাকে, যা রোমকূপের মুখ বন্ধ করে দিতে পারে। যদিও সন্ধেবেলা ওয়ার্কআউট করতে গেলে সানস্ক্রিনের প্রয়োজন নেই।
ওয়ার্কআউটের পরের যত্ন
ওয়ার্কআউটের পর ত্বকের যত্ন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানালেন সায়ন্তন। কারণ যে কোনও ধরনের শরীরচর্চা করলে ঘাম বেশি হয়। ফলে অনেক বেশি ব্যাকটেরিয়া আমাদের ত্বকে তৈরি হয়। যা বাইরের ধুলো, ময়লাকে বেশিমাত্রায় আকর্ষণ করে। ফলে বাড়িতে ফিরে প্রথমেই উষ্ণ গরম জলে স্নান করে নিন। জলের মধ্যে পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল যোগ করুন। যা আপনাকে রিফ্রেশ করবে। মানসিকভাবে ভারমুক্ত লাগবে। স্নানের সময় বাথ সল্টও ব্যবহার করতে পারেন। যা ত্বকের অভ্যন্তরে তৈরি হওয়া বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করবে। আবার এসময় বডি ওয়াশও ব্যবহার করতে পারেন। শরীরচর্চার পর মুখে এবং গলায় ডবল ক্লেনজিং করতে হবে। কারণ ওয়ার্কআউটের সময় শরীর থেকে অনেকটা জল ঘামের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। ত্বক ভিতর থেকে পরিষ্কার করার জন্য দু’বার করে ক্লেনজিং করা দরকার। শরীরচর্চার পর ত্বক ডিহাইড্রেটেড হয়ে থাকে। ত্বককে হাইড্রেট করা জরুরি। যে কোনও রসালো ফল, ফলের রস শরীরচর্চার পর খেতে পারেন।
সেরামের গুরুত্ব
ত্বক হাইড্রেট করার জন্য ক্লেনজিংয়ের পর ত্বকে ভালো করে সেরাম অ্যাপ্লাই করতে হবে। যে ধরনের ত্বক সে ধরনের সেরাম ব্যবহার করতে হবে। ত্বকে ব্রণ, অ্যাকনে হওয়ার প্রবণতা থাকলে স্যালিস্যালিক অ্যাসিড সঙ্গে নিয়াসিনামাইড যুক্ত সেরাম ব্যবহার করতে পারেন। কারও ত্বক নিষ্প্রভ হলে তিনি ভিটামিন সি যুক্ত সেরাম ব্যবহার করুন। বয়স্ক ত্বক হলে বা ত্বকে বলিরেখা চলে এলে সেক্ষেত্রে পেপটাইপ যুক্ত সেরাম ব্যবহার করতে পারেন। কারও ত্বকে দাগছোপ থাকলে তিনি কোজিক অ্যাসিড বা গ্লুটাথন যুক্ত সেরাম ব্যবহার করতে পারেন। হাইড্রেট করার তৃতীয় ধাপ ময়েশ্চারাইজার। ত্বকে সেরাম ব্যবহার করার পর খুব হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। সেটা অবশ্যই হায়ালুরনিক অ্যাসিড যুক্ত হতে হবে।
ঘরোয়া মাস্ক
সায়ন্তনের পরামর্শ, যাঁরা খুব বেশি ভঙ্গুর ত্বক বা অ্যাকনের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা ওয়ার্কআউট করার পর প্রথমে মুখ পরিষ্কার করে নিন। এরপর যে কোনও থেরাপিউটিক মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের ধরন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে বাজারচলতি মাস্ক কিনতে পারেন। আবার এটা বাড়িতেও বানানো যায়।
চন্দনের গুঁড়ো, ক্যালামাইন লোশন, কর্পূর গুঁড়ো, ক্লোভ অয়েল মিশিয়ে তৈরি মাস্ক ত্বকে অ্যাপ্লাই করুন। আধ ঘণ্টা রেখে সাধারণ জলে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
স্বরলিপি ভট্টাচার্য